ভবনা ডেস্কঃ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে থাকা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। আজ রোববার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের ১৫১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও গুণীজন সম্মাননা অনুষ্ঠানে এ দাবি করেন তিনি।সেলিমা রহমান বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যিনি বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীনতার ঘোষক। তিনি ঘোষণা না দিলে বাংলাদেশের আরও অনেক অনেক লোক মারা যেতেন। তিনি শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত হন নাই। তিনি নিজে মুক্তিযুদ্ধ করে তাঁর ব্যারাকে ফিরে গিয়েছিলেন। ব্যারাক থেকে তাঁকে আবার বাংলাদেশের মানুষ উঠিয়ে নিয়ে এসেছিল দেশের স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। যেটা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশকে আত্মমর্যাদাপূর্ণ দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিত করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ধুঁকে ধুঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি যখন গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলেন! তারপর আবারও ষড়যন্ত্র হয়। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কিন্তু এখনো বিদেশে অবস্থান করছেন। কারণ, তাঁকেও মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে এখনো কিন্তু মামলা প্রত্যাহার হয়নি। কাজেই এই আলোচনা সভা থেকে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার চাই।’
শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে এ দেশের স্বাধীনতা মোমবাতিটা জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সমাজ ও পৃথিবী চলে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে। পাকিস্তান থেকে এ পর্যন্ত যত ঘটনা তার পেছনে শহীদ সোহরাওয়ার্দী, এ কে ফজলুল হক এবং মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর অবদান রয়েছে। এঁদের সম্পর্কে আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানতে দেওয়া হয়নি।
‘আমাদের ইতিহাসে শের-ই-বাংলার নাম সবার প্রথমে থাকা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, নীতির ব্যাপারে তিনি আপসহীন ছিলেন। আমরা যদি সেই নীতি অনুসরণ করতে পারতাম। তাহলে আজকে যে ৫ আগস্ট, ৩৬ জুলাই যেটাকে বলেন, সেই দিনটি আসত না। এত মানুষের বুকের রক্ত ঝরতো না, এত শোষিত মানুষের কান্না সেদিন শোনা যেত না। কারণ, আমরা লড়েছিলাম একটা অসহ্য বঞ্চনা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে।
‘আমরা এখন একটা কঠিন সময়ে ক্রান্তিলগ্নে আছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা স্বস্তিতে নাই। কারণ, এখনো স্বৈরাচারের দোসরেরা আমাদের বিভিন্ন জায়গায় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে। তারা বিভিন্নভাবে চক্রান্ত করছে। এখনো যে বিশৃঙ্খলা আছে, বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা সেটি রুখে দিতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
‘গত ১৫ বছর কারাগারের দরজার ঘুরতে হয়েছে, অনেকে গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, অত্যাচারিত হয়েছে, নিপৃষ্ট হয়েছে এবং সাধারণ জনগণ পর্যন্ত গুম, খুন হয়েছে। তাদের যে স্বপ্ন, শহীদদের স্বপ্ন সার্থক করতে আমাদের সকলকে একত্রে কাজ করতে হবে’ বলেও জানান তিনি।
এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক যদি লাহোর প্রস্তাব না করতেন, তাহলে পাকিস্তান সৃষ্টি হতো না। যার ফলে পরবর্তীকালে মুক্তিযুদ্ধে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। জাতি বিনির্মাণে কোনো একজন নয়, বরং অনেকের ভূমিকা থাকে।’
তিনি আরও বলেন, এ দেশের জনগণ যাতে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়। সেই জন্য কাজ করে গেছেন শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক কাজ করে গেছেন।
শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বিএনপির উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এ এস এম আব্দুল হালিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ। এ সময় ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ১৩ ব্যক্তিকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়।
0 coment rios: