অনলাইন সংস্করণ
আজই শেষ হচ্ছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার। এর মধ্য দিয়ে শেষ হবে অনেক বড় একটা অধ্যায়ের, সঙ্গে ইতি ঘটবে কুড়ি ওভারের সংস্করণে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘পঞ্চপাণ্ডব’ শব্দটারও। আগেই শেষ হয়েছে পঞ্চপাণ্ডব খ্যাত মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের অধ্যায়।
শেষ পাণ্ডব হিসেবে এই ম্যাচটায় জয়ের প্রত্যাশা করতেই পারেন মাহমুদউল্লাহ। বিদায়টা ঘরের মাঠে হলে হয়তো অনেক কিছুই হতো তবে দেশের বাইরে হওয়ায় সেসব অনেকটা অনিশ্চিত। হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে আজ সন্ধ্যায় ভারতের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। আগের দুই ম্যাচ হেরে যাওয়ায় এই ম্যাচটা কেবল নিয়মরক্ষার হলেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জন্য বিশেষ কিছু।
দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি (১৪০) খেলা ক্রিকেটারের এই বিশেষ দিনে বাংলাদেশ ক্রিকেটের পক্ষ থেকে বিদায় জানাতে কোনো আয়োজন থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু হায়দরাবাদে ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে আসা দলের ফিল্ডিং কোচ নিক পোথাস পরিষ্কার করে কিছু বলতে চাইলেন না। তার কাছে মাহমুদউল্লাহকে বিদায়ি ম্যাচে কোনো সংবর্ধনা দেওয়া হবে কি না কিংবা কোনো আয়োজন আছে কি না এমন প্রশ্নে পোথাস বললেন, ‘দুঃখিত, এটা (দলের) অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’
মাহমুদউল্লাহ যখন শেষটা রাঙানোর অপেক্ষায় তখন হতাশ করে চলছে বাংলাদেশ দল। প্রথম দুটি ম্যাচে ব্যাটারদের ব্যর্থতা ছিল স্পষ্ট। কোনো ম্যাচেই দেড়শ রান ছুঁতে পারেনি টাইগাররা। ব্যাটারদের এমন হতাশার কারণ জানতে চাইলে পোথাস তুলে ধরেন বাংলাদেশ ও ভারতের শক্তিমত্তার পার্থক্য, ‘আমরা দারুণ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাদেরই মাঠে খেলছি। আপনি সঠিক বলেছেন, দুদলের পার্থক্য দেখলে বোঝা যাবে সব। টপঅর্ডারে দেখুন ইমন (পারভেজ হোসেন) ২ ম্যাচ খেলেছে। হ্যাঁ, দলে অভিজ্ঞরাও আছে।’
আগে পার্থক্যের কথা বললেও পরে নিজেদের ব্যর্থতা মেনে নেন ফিল্ডিং কোচ, ‘আমরা প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যাটিং করতে পারিনি। অবশ্যই ১৭০-১৮০ রান করতে পারতাম। তারা ২২০ করুক বা যাই করুক, সেটা বোলিংয়ের ব্যাপার। সেটা আমি মেনে নিচ্ছি। আমাদের আরও বেশি রান করা দরকার ছিল। দারুণ উইকেট ছিল। ভারতও অনেক ভালো বল করেছে। আমরাও ম্যাচের অনেক সময়ে অনেক সুযোগ নিতে পারিনি।’
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দলের ব্যাটাররা যখন দ্রুত সাজঘরে ফিরছিলেন তখন হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ। ৩৯ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলে হারের ব্যবধান কমালেও সেটি টি-টোয়েন্টি সংস্করণের সঙ্গে একদমই বেমানান। তার বিদায়ে যাদের বিকল্প হিসেবে ভাবা হচ্ছে তাদের নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের যে মাহমুদউল্লাহ ঝড় তুলেছিলেন ফিনিশিংয়ে, সেই ভূমিকাটা নিতে পারবেন কে? দিল্লিতে অবসরের ঘোষণার দিন মাহমুদউল্লাহ নিজেই বলেছিলেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে ৬-৭ নম্বরে ব্যাট করা সবচেয়ে কঠিন। পাঁচ ইনিংসের মধ্যে তিনটিতে ব্যর্থ হওয়া স্বাভাবিক। জাকের আলী অনিক, শামীম পাটোয়ারী, আফিফ হোসেন এবং ইয়াসির রাব্বির মতো খেলোয়াড়দের আমি ভবিষ্যতে ফিনিশার হিসেবে দেখতে চাই। তাদের সাহসী হতে হবে, ব্যর্থতার ভয় না করে টিম ম্যানেজমেন্ট, কোচ ও অধিনায়কের সমর্থন পেতে হবে।’
৪ থেকে ২০ নম্বর ওভারের মধ্যেই বেশিরভাগ সময়ে খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। ক্যারিয়ারের শুরুতে টি-টোয়েন্টিতে তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১০৩.৭৮। তবে ২০১৬ থেকে ২০১৯-এ ফিনিশারের ভূমিকায় তার স্ট্রাইক রেট বেড়ে হয় ১৩২.৩৩। তবে শেষ চার বছরে নিজেই নিজের ছায়া হয়ে পড়েন। কেননা এই সময়ে তার স্ট্রাইক রেট নেমে আসে ১১০.২০-এ।
0 coment rios: